বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় (বাকৃবি) শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক সাইফুল ইসলামের নারী কেলেঙ্কারির খবর ফাঁস হয়ে গেছে। ওই কেলেঙ্কারিতে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি মুর্শেদুজ্জামান খান বাবু ও বঙ্গবন্ধু হল শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি আব্দুল হাকিমের নামও উঠে এসেছে। এনিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেইসবুকে তোলপাড় চলছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, বাকৃবি শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক সাইফুল ইসলাম ক্ষমতার প্রভাব খাটিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের একাধিক ছাত্রীর সঙ্গে শারীরিক সম্পর্কে জড়িয়েছেন। প্রতিবাদ করলে তাকে হল তথা ক্যাম্পাস থেকে বের করে দেয়ার হুমকি দেন তিনি। বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হওয়া সুন্দরী ছাত্রীদের টার্গেট করেন তিনি। পরে তার মোবাইল নম্বর নিয়ে প্রথমে প্রেমের প্রস্তাব দেন। আর তা না মেনে নিলে হুমকি দিয়ে অথবা ব্ল্যাকমেইল করে শারীরিক সম্পর্ক গড়ে তোলেন তিনি। বিষয়টি এতোদিন গোপন থাকলেও সম্প্রতি পূরবী রায় নামে এক ছাত্রলীগ নেত্রীর সঙ্গে সাইফুলের শারীরিক সম্পর্কের বিষয়টি ফাঁস হয়ে গেছে।
এনিয়ে একটি অডিও এবং ভিডিও বার্তা সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যম ফেসবুকে ছেড়ে দেয়া হয়েছে। বিষয়টি নিয়ে সমালোচনার মুখে পড়েছে ছাত্রলীগের একাধিক নেতাকর্মী। আলোচিত ওই কেলেঙ্কারীর সঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি মুর্শেদুজ্জামান খান বাবুর নামও বেরিয়ে এসেছে।
ওই ভিডিও বার্তায় ছাত্রলীগ নেত্রী জানিয়েছেন, তাকে প্রলোভন দেখিয়ে কক্সবাজারে নিয়ে ছাত্রলীগ সম্পাদক সাইফুল তার সঙ্গে আপত্তিকর কাজ করেছেন। দুই রাত তিনি হোটেলে সাইফুলের সঙ্গে ছিলেন। এসময় তার বেশ কিছু আপত্তিকর ছবি তুলে সাইফুল তার সঙ্গে রেখে দিয়েছেন। যা দিয়ে পরবর্তীতে তাকে ব্ল্যাকমেইল করে। এমনকি ওই নেত্রীর স্বামীর কাছ থেকে দুই লাখ টাকাও আদায় করে নেয়। আর এ কেলেঙ্কারিতে বাকৃবি ছাত্রলীগ সভাপতি মুর্শেদুজ্জামান খান বাবুর হাত রয়েছে বলে দাবি করেন তিনি।
এদিকে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ওই ছাত্রলীগ নেত্রীর বিয়ে হয়েছিল বেসরকারী চাকরীজীবি শিমুল মাহমুদের সাথে। ২০১৪ সালের ২৮ নভেম্বর তাদের বিয়ে হয়। তারা ১ ডিসেম্বর থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের ফার্স্ট গেটে পঁচা সুমনের বাসায় ভাড়া থাকত। কিন্তু বিয়ের আগেই ঘটে যাওয়া সাইফুলের সাথে ওই নেত্রীর শারীরিক সম্পর্কের বিষয়টি ফাঁস হয়ে গেলে সম্প্রতি তাদের সংসার ভেঙে যায়। আর সম্প্রতি অস্ত্র মামলায় সাইফুল পুলিশের কাছে ধরা পড়ার পর থেকে পূরবীও অস্বীকার করতে থাকে শিমুলকে।
এবিষয়ে শিমুল জানান, ওই মেয়েটা আমার জীবনটা ধ্বংস করে দিয়েছে। আমি চাই সে উপযুক্ত শাস্তি পাক। একই বিষয়ে পূরবী জানান, আমার সাথে সাইফুল ইসলামের প্রেমের সম্পর্ক ছিল, তাই আমি ও তিনি স্বেচ্ছায় কক্সবাজার ঘুরতে গিয়েছিলাম। আমাকে কোনো প্রকার জোর-জবরদস্তি করা হয়নি। কিছুদিন পর আমরা সমঝোতার মাধ্যমে সম্পর্ক ব্রেকআপ করি। শিমুলের সাথে আমার কোন সম্পর্ক নেই।
বর্তমানে ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক অস্ত্র মামলায় জেলে থাকায় তার বক্তব্য নেয়া সম্ভব হয়নি।
এব্যাপারে ছাত্রলীগের সভাপতি মুর্শেদুজ্জামান খান বাবুকে ফোন করা হলে তার ফোন বন্ধ পাওয়া যায়।